আবির একজন শান্ত স্বভাবের তরুণ। আশুগঞ্জ বাজারের একটি ছোট ফুলের দোকানে কাজ করেন। দোকানটি আশপাশের এলাকায় বেশ জনপ্রিয়, বিশেষ করে বিয়ে এবং উৎসবের ফুলের সাজসজ্জার জন্য। আবির নিজের কাজে পারদর্শী এবং ফুল দিয়ে সুন্দরভাবে সাজানোর দক্ষতা তার বিশেষত্ব। কিন্তু এই দক্ষতাই একদিন তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিল এক অপ্রত্যাশিত এবং বেদনাদায়ক ঘটনায়।
ঘটনার শুরু
আবিরের জীবন সাদামাটা হলেও তার হৃদয়ে ছিল রিয়া নামের এক মেয়ের প্রতি গভীর ভালোবাসা। তারা দুই বছর ধরে চুপিসারে সম্পর্কে ছিল। রিয়া তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, একদিন তারা নিজেদের জীবন একসঙ্গে শুরু করবে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রিয়া কিছুটা দূরে সরে যাচ্ছিল। আবির ভেবেছিল হয়তো পারিবারিক চাপের কারণেই রিয়া এমন করছে।
বাসর ঘর সাজানোর দায়িত্ব
গত সোমবার ফুলের দোকানে একটি অর্ডার আসে বাসর ঘর সাজানোর। দোকানমালিক আবিরকে সেই দায়িত্ব দিয়ে পাঠান। আবির খুশি মনে ফুলের তোড়া আর অন্যান্য সাজানোর উপকরণ নিয়ে রওনা দেয়। সে ভেবেছিল এটি তার কাজের আরেকটি সাধারণ দিন।
মর্মান্তিক দৃশ্য
বাসর ঘরে পৌঁছে আবির দেখেন ঘরটি সাজানো হচ্ছে তার নিজের গার্লফ্রেন্ড রিয়ার বিয়ের জন্য। রিয়া তখন নতুন বউয়ের পোশাকে সেজে বসে আছে, পাশে অপরিচিত এক যুবক। আবিরের মনে যেন বাজ পড়ল। চারপাশ ঘোলা হয়ে গেল তার চোখে।
ক্ষোভের বিস্ফোরণ
এই হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখে আবির নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারল না। ক্ষোভে ফেটে পড়ে সে। হাতের ফুলগুলো মেঝেতে ছুড়ে ফেলে দেয় এবং ঘরের সাজানো পর্দা, বিছানার চাদরে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে বাসর ঘরটি আতঙ্কের কেন্দ্রে পরিণত হয়। অতিথিরা চিৎকার করতে থাকে, কেউ কেউ আবিরকে থামানোর চেষ্টা করে, কিন্তু ততক্ষণে ঘর জ্বলছে।
গ্রেপ্তার এবং পরিণতি
পরে পুলিশ এসে আবিরকে গ্রেপ্তার করে। রিয়ার পরিবার তার এই কাজের জন্য তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার দাবি জানায়। অন্যদিকে, এলাকার মানুষ এই ঘটনা নিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়—কেউ আবিরের এই কাজকে তার ভেঙে যাওয়া হৃদয়ের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখেন, কেউ আবার এটিকে অন্যায় ও অপরাধ বলে মনে করেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন