ভারতের অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সাম্প্রতিক একটি মন্তব্য ঘিরে দুই বাংলার মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। একটি অনুষ্ঠানে তিনি রসিকতার ছলে বলেছিলেন, "বাংলাদেশ দখল করতে একদিনও সময় লাগবে না।" তাঁর এই মন্তব্য মুহূর্তের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এবং সমালোচনার ঝড় তোলে।
বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ, বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিত্বরা মিঠুনের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন। ঢাকার একটি সংবাদ সম্মেলনে বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন,
"মিঠুন চক্রবর্তী আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং আত্মত্যাগ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। তিনি যদি জানতেন, কীভাবে একটি ছোট্ট জাতি নিজেদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে, তবে এ ধরনের মন্তব্য করতে সাহস পেতেন না।"
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। টুইটারে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন,
"মিঠুন দাদার সিনেমা দেখে বড় হয়েছি। কিন্তু এই মন্তব্য আমাকে গভীরভাবে আহত করেছে। দুই বাংলার মধ্যে ভালোবাসার সেতুটি কি এমন কথায় ভেঙে যাবে?"
ভারতের প্রতিক্রিয়া
বাংলার সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্বকারী একাধিক ভারতীয়ও মিঠুনের বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করেছেন। কলকাতার বিশিষ্ট অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এক টুইট বার্তায় বলেন,
"বাংলাদেশ আমাদের আত্মার আত্মীয়। মিঠুনদার মতো একজন বর্ষীয়ান অভিনেতার এ ধরনের মন্তব্য আমাদের সম্পর্কের প্রতি অবজ্ঞার প্রকাশ।"
এদিকে, কিছু মানুষ অবশ্য মিঠুনের পক্ষ নিয়েছেন। তাঁদের দাবি, এটি নিছকই একটি রসিকতা, যা ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। তবে, বিতর্কের চাপ এতটাই বেড়ে যায় যে মিঠুন নিজেই অবশেষে একটি ভিডিও বার্তায় ক্ষমা চেয়ে বলেন,
"আমি শুধু মজা করেছি। আমার বক্তব্যে যদি কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন, তবে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।"
পরিণতি
মিঠুনের মন্তব্যের ফলে দুই বাংলার মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে, তবে পরিস্থিতি শান্ত করতে উভয় দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিত্বরা আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
কলকাতার এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী বলেন,
"আমরা এক নদীর দুই তীর। কখনো ভুল বোঝাবুঝি হলেও আমাদের ঐক্য এবং ভালোবাসা অটুট থাকবে।"
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে দুই বাংলার মানুষ আবারও বুঝতে পেরেছেন যে, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে শুধু আবেগ নয়, দায়িত্বশীল কথাবার্তাও গুরুত্বপূর্ণ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন